ভিভো আইকিউও ১১এস এর দাম কত

Vivo iQOO 11s একটি আধুনিক এবং শক্তিশালী স্মার্টফোন, যা ২০২৩ সালের ১০ জুলাই বাজারে এসেছে। এটি ১২ জিবি র‍্যাম এবং ২৫৬ জিবি স্টোরেজ সহ পাওয়া যায়। ফোনটিতে ৬.৭৮ ইঞ্চি বড় উচ্চ রেজোলিউশনের ডিসপ্লে রয়েছে, যা সিনেমা দেখা বা গেম খেলার জন্য উপযুক্ত। ক্যামেরার দিক দিয়ে এটি পিছনে তিনটি লেন্স নিয়ে এসেছে—৫০ + ৮ + ১৩ মেগাপিক্সেল এবং সামনে ১৬ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা। ব্যাটারি ক্ষমতা ৪৭০০ এমএএইচ এবং ২০০ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করে, ফলে ফোন খুব দ্রুত চার্জ হয়। এছাড়াও এটি Wi-Fi 6E, ব্লুটুথ ৫.৩ এবং গরিলা গ্লাস ভিকটাসের মতো আধুনিক প্রযুক্তি সমর্থন করে। Vivo iQOO 11s মূলত যারা দ্রুত পারফরম্যান্স এবং উন্নত ডিসপ্লে সহ ফোন খুঁজছেন তাদের জন্য একটি ভালো পছন্দ।

 ভিভো-আইকিউও-১১এস-এর-দাম-কত

ভিভো আইকিউও ১১এস এর দাম কত বাংলাদেশ মার্কেটে

ভিভো আইকিউও ১১এস এই মোবাইল আশা করা যাচ্ছে, বাংলাদেশ মার্কেটে আন অফিসিয়াল ভাবে এর দাম ধরা হয়েছে ৬৫,০০০ টাকা মাত্র।

Vivo iQOO 11s ওভারভিউ

Vivo iQOO 11s হল Vivo ব্র্যান্ডের একটি প্রিমিয়াম স্মার্টফোন, যা ২০২৩ সালের ১০ জুলাই বাজারে এসেছে। এটি মূলত তাদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে যারা দ্রুত পারফরম্যান্স, উন্নত ডিসপ্লে এবং প্রিমিয়াম ডিজাইন চায়। ফোনটি Android 13 অপারেটিং সিস্টেমের ওপর চলে এবং এর সাথে আসে OriginOS 3 ইন্টারফেস, যা ব্যবহারকে আরও স্বচ্ছ এবং সহজ করে তোলে। হার্ডওয়্যার দিক থেকে এটি Qualcomm Snapdragon 8 Gen 2 চিপসেট ব্যবহার করে, যা একটি শক্তিশালী অক্টা-কোর প্রসেসরের মাধ্যমে হাই-পারফরম্যান্স নিশ্চিত করে। ৪ ন্যানোমিটার আর্কিটেকচারের এই চিপসেট অ্যাড্রেনো ৭৪০ জিপিইউ সহ আসে, ফলে গেমিং এবং গ্রাফিক্স হেভি অ্যাপস চালানোর সময় ফোনটি খুবই স্মুথ কাজ করে।

ডিসপ্লের ক্ষেত্রে Vivo iQOO 11s-এ ৬.৭৮ ইঞ্চি LTPO4 AMOLED স্ক্রিন ব্যবহার করা হয়েছে। QHD+ রেজোলিউশন এবং ১৪৪ হার্জ রিফ্রেশ রেটের কারণে ভিডিও, গেম এবং সাধারণ ইউজিং এক্সপেরিয়েন্স অনেক প্রাণবন্ত মনে হয়। স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা ১৮০০ নিট, যা আলোয় বা সূর্যের আলোতে ব্যবহার করার সময় কোনো সমস্যা দেয় না। এছাড়াও, HDR10+ সাপোর্ট থাকায় ছবি ও ভিডিও দেখার সময় কালার এবং কনট্রাস্ট অনেক বেশি ভালো থাকে। স্ক্রিনটি করনিং গরিলা গ্লাস ভিকটাস দিয়ে সুরক্ষিত, যা স্ক্র্যাচ বা ছোট ধাক্কা থেকে রক্ষা করে।

ফটোগ্রাফির জন্য Vivo iQOO 11s-এ ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা সিস্টেম আছে। প্রাইমারি ক্যামেরা ৫০ মেগাপিক্সেল, আলট্রা-ওয়াইড ৮ মেগাপিক্সেল এবং টেলিফটো ১৩ মেগাপিক্সেল। ক্যামেরায় অপটিক্যাল ইমেজ স্টেবিলাইজেশন (OIS) রয়েছে, যা ছবি তোলার সময় ঝাপসা কমায়। ভিডিও রেকর্ডিং ৮কে পর্যন্ত সম্ভব। সেলফির জন্য ১৬ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা রয়েছে, যা সুন্দর সেলফি এবং ভিডিও কলের জন্য যথেষ্ট।

ডিজাইন দিক থেকে ফোনটি প্রিমিয়াম এবং আধুনিক। উচ্চতা ১৬৪.৮ মিমি, প্রস্থ ৭৭ মিমি এবং মাত্রা ৮.৪ মিমি। ফোনের ওজন ২০৬.৫ গ্রাম, যা হ্যান্ডলিংকে আরামদায়ক রাখে। কালার অপশন হিসেবে রয়েছে ব্ল্যাক, স্কাই ব্লু এবং লেজেন্ডারি হোয়াইট। ব্যাটারি ৪৭০০ এমএএইচ লিথিয়াম পলিমার, যা ২০০ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সমর্থন করে। ফলে খুব দ্রুত ফোন চার্জ করা সম্ভব।

মেমরি এবং স্টোরেজ দিক থেকে Vivo iQOO 11s-এ ১২ জিবি LPDDR5X র‍্যাম এবং ২৫৬ জিবি UFS 4.0 স্টোরেজ রয়েছে। এটি ব্যবহারকারীদের বড় অ্যাপ, গেম এবং মিডিয়া ফাইল সংরক্ষণ করার জন্য যথেষ্ট। নেটওয়ার্ক এবং কানেক্টিভিটির দিক থেকে এটি ৫জি, Wi-Fi 6E, ব্লুটুথ ৫.৩, NFC এবং GPS সমর্থন করে। এছাড়াও ফোনে ইনফ্রারেড সেন্সর, ডুয়াল সিম সাপোর্ট, USB টাইপ-সি ২.০ এবং ভল্টে সুবিধা রয়েছে।

সিকিউরিটি ফিচারের মধ্যে রয়েছে অন-স্ক্রিন ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর এবং ফেস আনলক, যা ব্যবহারকারীর ডিভাইসকে নিরাপদ রাখে। অডিওতে রয়েছে স্টেরিও লাউডস্পিকার এবং USB টাইপ-সি পোর্টের মাধ্যমে হেডফোন কানেকশন।

সংক্ষেপে, Vivo iQOO 11s হল একটি শক্তিশালী, প্রিমিয়াম লুকের এবং আধুনিক ফিচার সমৃদ্ধ স্মার্টফোন। যারা দ্রুত পারফরম্যান্স, হাই-রেজোলিউশন ডিসপ্লে, উন্নত ক্যামেরা এবং ফাস্ট চার্জিং সুবিধা চায়, তাদের জন্য এটি একটি খুব ভালো বিকল্প। বিশেষ করে গেমার এবং প্রযুক্তিপ্রেমীদের জন্য এই ফোন একটি চমৎকার পছন্দ হতে পারে।

Vivo iQOO 11s এর সম্পূর্ণ স্পেসিফিকেশন

শ্রেণি স্পেসিফিকেশন
ব্র্যান্ড Vivo
মডেল iQOO 11s
ডিভাইস টাইপ স্মার্টফোন
রিলিজ তারিখ ১০ জুলাই ২০২৩
অবস্থা পাওয়া যাচ্ছে
অপারেটিং সিস্টেম Android 13
ইউজার ইন্টারফেস OriginOS 3
চিপসেট Qualcomm Snapdragon 8 Gen 2 (SM8550-AB)
CPU অক্টা-কোর (1×3.2GHz Cortex-X3 + 2×2.8GHz Cortex-A715 + 2×2.8GHz Cortex-A710 + 3×2.0GHz Cortex-A510)
জিপিইউ Adreno 740
ডিসপ্লে টাইপ LTPO4 AMOLED
স্ক্রিন সাইজ 6.78 ইঞ্চি
রেজোলিউশন 1440 x 3200 পিক্সেল (QHD+)
অ্যাসপেক্ট রেশিও 20:9
পিক্সেল ডেনসিটি 518 ppi
স্ক্রিন প্রোটেকশন Corning Gorilla Glass Victus
রিফ্রেশ রেট 144 Hz
প্রাইমারি ক্যামেরা 50MP (প্রাইমারি) + 8MP (উল্ট্রা-ওয়াইড) + 13MP (টেলিফটো)
ফ্রন্ট ক্যামেরা 16MP
ভিডিও রেকর্ডিং 8K@30fps, 4K@30/60fps, 1080p@30/60/120/240fps
ব্যাটারি টাইপ Li-Po 4700 mAh
ফাস্ট চার্জিং 200W ওয়্যারড
স্টোরেজ 256GB UFS 4.0
র‍্যাম 12GB LPDDR5X
সিম স্লট ডুয়াল সিম (ন্যানো + ন্যানো)
নেটওয়ার্ক 2G / 3G / 4G / 5G
ওয়াই-ফাই Wi-Fi 6E (802.11 a/b/g/n/ac/ax) 5GHz/6GHz
ব্লুটুথ v5.3
জিপিএস হ্যাঁ (A-GPS, Glonass)
NFC হ্যাঁ
ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর অন-স্ক্রিন (অপটিক্যাল)
ফেস আনলক হ্যাঁ
সেন্সরস লাইট সেন্সর, প্রোক্সিমিটি সেন্সর, অ্যাক্সেলরোমিটার, কম্পাস, গাইরোস্কোপ
ওজন 206.5 গ্রাম
ডাইমেনশনস 164.8 x 77 x 8.4 মিমি
কালার অপশন ব্ল্যাক, স্কাই ব্লু, লেজেন্ডারি হোয়াইট (BMW M branding)

ভালো দিকসমূহ

  1. শক্তিশালী পারফরম্যান্স: Snapdragon 8 Gen 2 চিপসেট এবং ১২ জিবি র‍্যামের ফলে ফোনটি খুব দ্রুত এবং স্মুথ কাজ করে। গেম খেলা বা হেভি অ্যাপ ব্যবহার করার সময় কোনো দেরি বা ল্যাগ নেই।
  2. উন্নত ডিসপ্লে: ৬.৭৮ ইঞ্চি QHD+ AMOLED ডিসপ্লে ১৪৪Hz রিফ্রেশ রেট এবং HDR10+ সাপোর্টের কারণে ভিডিও, গেম এবং ছবি দেখার অভিজ্ঞতা চমৎকার। স্ক্রিন উজ্জ্বলতা যথেষ্ট বেশি, সূর্যালোকেও ভালো দেখা যায়।
  3. দ্রুত চার্জিং: ২০০ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সাপোর্টের কারণে ফোন মাত্র কিছু মিনিটে দ্রুত চার্জ হয়ে যায়, যা ব্যস্ত জীবনে অনেক সুবিধা দেয়।
  4. স্টাইলিশ ডিজাইন: ফোনের লুক প্রিমিয়াম এবং সুন্দর। BMW M লিজেন্ডারি হোয়াইট সংস্করণে ফোনটি আরও আকর্ষণীয় দেখায়।
  5. স্টেরিও স্পিকার ও মাল্টিমিডিয়া সুবিধা: স্টেরিও স্পিকার এবং ইনফ্রারেড সেন্সর থাকায় মিউজিক বা ভিডিও দেখার সময় ভালো অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়।

দুর্বল দিকসমূহ

  1. ক্যামেরার কিছু সীমাবদ্ধতা: প্রাইমারি ক্যামেরা ভালো হলেও টেলিফটো এবং আলট্রা-ওয়াইড ক্যামেরার পারফরম্যান্স অনেক সময় প্রতিযোগীদের তুলনায় কম মনে হতে পারে।
  2. ওয়্যারলেস চার্জিং ও পানি-ধুলো সুরক্ষা নেই: এই ফোনে ওয়্যারলেস চার্জিং সুবিধা নেই এবং IP রেটিংও নেই, ফলে পানি বা ধুলো থেকে ফোনের সুরক্ষা সীমিত।
  3. সফটওয়্যার ও ব্লোটওয়্যার সমস্যা: ফোনের ইন্টারফেসে কিছু অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ থাকে এবং মাঝে মাঝে সফটওয়্যার বাগ দেখা দিতে পারে।
  4. সফটওয়্যার আপডেট সীমিত: দীর্ঘ সময়ের জন্য সফটওয়্যার সাপোর্ট সীমিত হতে পারে, ফলে নতুন আপডেট কম সময়ে পাওয়া যাবে।

 ভালো অভিজ্ঞতা

  • দ্রুত পারফরম্যান্স: Snapdragon 8 Gen 2 চিপসেট ও ১২GB র‍্যামের কারণে ফোনটি গেমিং, মাল্টিটাস্কিং এবং হেভি অ্যাপ ব্যবহারে অত্যন্ত দ্রুত।
  • উন্নত ডিসপ্লে: ৬.৭৮ ইঞ্চি QHD+ AMOLED ডিসপ্লে ১৪৪Hz রিফ্রেশ রেট ও HDR10+ সাপোর্টের ফলে ভিডিও ও গেমিং অভিজ্ঞতা চমৎকার।
  • দ্রুত চার্জিং: ২০০W ফাস্ট চার্জিং সাপোর্টের মাধ্যমে ফোনটি মাত্র ১৫ মিনিটে ৮৩% পর্যন্ত চার্জ হয়, যা ব্যস্ত জীবনে সময় বাঁচায়।
  • স্টাইলিশ ডিজাইন: BMW M লিজেন্ডারি হোয়াইট সংস্করণে ফোনটির লুক প্রিমিয়াম ও আকর্ষণীয়।
  • স্টেরিও স্পিকার ও ইনফ্রারেড: স্টেরিও স্পিকার ও ইনফ্রারেড সেন্সরসহ ফোনটি মাল্টিমিডিয়া ব্যবহারে সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা প্রদান করে।

খারাপ অভিজ্ঞতা

  • সফটওয়্যার সমস্যা: FuntouchOS 13 ইন্টারফেসে কিছু ব্লোটওয়্যার অ্যাপ ও সফটওয়্যার বাগ রয়েছে, যা ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতাকে প্রভাবিত করতে পারে।
  • ক্যামেরা পারফরম্যান্স: প্রাইমারি ক্যামেরা ভালো হলেও, টেলিফটো ও আলট্রা-ওয়াইড ক্যামেরার পারফরম্যান্স কিছুটা পিছিয়ে।
  • ওয়্যারলেস চার্জিং ও IP রেটিং অনুপস্থিত: ওয়্যারলেস চার্জিং ও IP রেটিং না থাকার কারণে ফোনটি কিছুটা কম সুরক্ষিত।
  • সফটওয়্যার আপডেটের সীমাবদ্ধতা: iQOO ফোনগুলোর সফটওয়্যার আপডেটের সময়সীমা সীমিত, যা দীর্ঘমেয়াদে সাপোর্টের অভাব সৃষ্টি করতে পারে।

উপসংহার

Vivo iQOO 11s হল একটি শক্তিশালী এবং স্টাইলিশ স্মার্টফোন, যা দ্রুত পারফরম্যান্স, উন্নত ডিসপ্লে এবং ফাস্ট চার্জিং সুবিধা প্রদান করে। গেমার এবং প্রযুক্তিপ্রেমীদের জন্য এটি খুব ভালো বিকল্প। তবে ক্যামেরা কিছু ক্ষেত্রে অন্যান্য প্রিমিয়াম ফোনের তুলনায় কম কার্যকর, এবং ফোনে ওয়্যারলেস চার্জিং বা পানি-ধুলো সুরক্ষার সুবিধা নেই।

সার্বিকভাবে, যারা উচ্চ ক্ষমতার ফোন এবং প্রিমিয়াম ডিজাইন চায়, তাদের জন্য Vivo iQOO 11s একটি আকর্ষণীয় এবং সন্তোষজনক পছন্দ।

Leave a Comment