মটোরোলা এজ ৪০ নিওদাম কত বাংলাদেশ

Motorola Edge 40 Neo একটি প্রিমিয়াম ডিজাইনের স্মার্টফোন, যেটি ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সালে বাজারে আসে। এটি মূলত মিড-রেঞ্জ বাজেটের মধ্যে একটি চমৎকার ফোন, যার দাম আনুমানিক ৩১,২০০ টাকা (অফিশিয়ালি নয়)। ফোনটিতে আছে ৮ জিবি RAM এবং ১২৮ জিবি স্টোরেজ, যা দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত।

এই ফোনে ৬.৫৫ ইঞ্চির ফুল এইচডি+ ডিসপ্লে, শক্তিশালী ৫০+১৩ মেগাপিক্সেল রিয়ার ক্যামেরা ও ৩২ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা থাকায় ছবি ও ভিডিও তোলার অভিজ্ঞতা হবে অনেক উন্নত। এছাড়াও এতে রয়েছে ৫০০০ এমএএইচ ব্যাটারি এবং ৬৮ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সুবিধা, যা দ্রুত চার্জ হয় এবং দীর্ঘক্ষণ ব্যাকআপ দেয়।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ফোনটি IP68 ওয়াটারপ্রুফ সার্টিফায়েড, অর্থাৎ এটি পানির ধাক্কায় সহজে নষ্ট হয় না। Wi-Fi 6E, Bluetooth 5.3 এবং Gorilla Glass এর মত আধুনিক সুবিধাও এতে রয়েছে।

 মটোরোলা এজ ৪০ নিওদাম কত বাংলাদেশ

মটোরোলা এজ ৪০ নিওদাম কত বাংলাদেশ মার্কেটে

মটোরোলা এজ ৪০ নিওদাম এই মোবাইলটি আশা করা যাচ্ছে, বাংলাদেশ মার্কেটে আন অফিসিয়াল ভাবে দাম ধরা হয়েছে ৩১,০০০ টাকার মত হবে।

মটোরোলা এজ ৪০ নিও ওভারভিউ

Motorola Edge 40 Neo একটি আকর্ষণীয় ডিজাইনের ৫জি স্মার্টফোন, যেটি ২০২৩ সালের ১৪ই সেপ্টেম্বর বাজারে আসে। এটি একটি মিড-রেঞ্জ স্মার্টফোন হলেও এতে রয়েছে অনেক প্রিমিয়াম ফিচার, যা অনেক ব্যয়বহুল ফোনের সাথেও তুলনা করা যায়। বাংলাদেশে এই ফোনের আনঅফিশিয়াল দাম ধরা হয়েছে প্রায় ৩১,২০০ টাকা (৮ জিবি RAM এবং ১২৮ জিবি স্টোরেজ ভ্যারিয়েন্ট)।

এই ফোনে ৬.৫৫ ইঞ্চির বড় ও উজ্জ্বল P-OLED ডিসপ্লে রয়েছে, যার রেজোলিউশন 1080×2400 পিক্সেল। এতে HDR10+ সাপোর্ট এবং ১৪৪ হার্টজ রিফ্রেশ রেট থাকায় ভিডিও দেখা বা গেম খেলা হবে অনেক স্মুথ ও চমৎকার অভিজ্ঞতা। স্ক্রিনের উপর রয়েছে কর্নিং গরিলা গ্লাস, যা স্ক্র্যাচ ও ছোটখাটো ধাক্কা থেকে ফোনটিকে সুরক্ষা দেয়।

পারফরম্যান্সের দিক থেকে এতে ব্যবহৃত হয়েছে MediaTek Dimensity 7030 চিপসেট, যেটি ৬ ন্যানোমিটার প্রযুক্তিতে তৈরি। এর সাথে আছে ৮ জিবি LPDDR4X RAM এবং ১২৮ জিবি UFS 2.2 স্টোরেজ, যা দারুণ স্পিড এবং স্টোরেজ পারফরম্যান্স দেয়। ফোনটি অ্যান্ড্রয়েড ১৩ ভার্সনে চলে, এবং ভবিষ্যতে অ্যান্ড্রয়েড ১৪-তে আপডেট পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ক্যামেরা সেকশনে Motorola Edge 40 Neo বেশ শক্তিশালী। পেছনে রয়েছে ডুয়াল ক্যামেরা সেটআপ – একটি ৫০ মেগাপিক্সেলের প্রাইমারি সেন্সর যেটিতে আছে OIS (অপটিক্যাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন), এবং একটি ১৩ মেগাপিক্সেলের আল্ট্রা-ওয়াইড সেন্সর। সামনে সেলফির জন্য আছে ৩২ মেগাপিক্সেলের হাই-রেজোলিউশন ক্যামেরা। ভিডিও রেকর্ডিং 4K পর্যন্ত করা যায় এবং এতে HDR মোড, ফেস ডিটেকশন, টাচ টু ফোকাস ইত্যাদি ফিচার রয়েছে।

ব্যাটারির দিক থেকেও ফোনটি বেশ ভালো। এতে আছে ৫০০০ mAh ক্ষমতার লি-পলিমার ব্যাটারি, যেটিতে ৬৮ ওয়াট টার্বো ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট রয়েছে। মাত্র ১৫ মিনিটেই এটি ৫০% পর্যন্ত চার্জ হতে পারে। ব্যাটারির পাশাপাশি, ফোনটিতে রয়েছে স্টেরিও স্পিকার, ডলবি অ্যাটমস সাউন্ড, এবং ইউএসবি টাইপ-সি অডিও জ্যাক।

Motorola Edge 40 Neo IP68 সার্টিফাইড, যার মানে ফোনটি পানি এবং ধুলাবালি প্রতিরোধে সক্ষম। এটি ১.৫ মিটার পানির নিচে ৩০ মিনিট পর্যন্ত সচল থাকতে পারে। এই ফিচারটি সাধারণত অনেক দামি ফোনে দেখা যায়, তাই এটি এই দামে পাওয়া সত্যিই দারুণ।

সংযোগের দিক থেকে এতে রয়েছে ৫জি, Wi-Fi 6E, Bluetooth 5.3, NFC, এবং GPS এর মতো সব আধুনিক প্রযুক্তি। এছাড়া এতে অন-স্ক্রিন ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর, ফেস আনলক এবং নানা ধরনের সেন্সরও রয়েছে।

মটোরোলা এজ ৪০ নিওর সম্পূর্ণ স্পেসিফিকেশন

বিভাগ স্পেসিফিকেশন
মডেল Motorola Edge 40 Neo
রিলিজ তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
দাম (বাংলাদেশ) আনুমানিক ৳৩১,২০০ (8GB+128GB, আনঅফিশিয়াল)
অপারেটিং সিস্টেম Android 13 (Android 14 এ আপগ্রেডযোগ্য)
চিপসেট MediaTek Dimensity 7030 (6nm)
CPU অক্টা-কোর (2x Cortex-A78 @2.5GHz + 6x Cortex-A55 @2.0GHz)
GPU Mali-G610 MC3
RAM 8GB LPDDR4X
ইন্টারনাল স্টোরেজ 128GB UFS 2.2 (এক্সপেন্ডেবল নয়)
ডিসপ্লে টাইপ 6.55 ইঞ্চি P-OLED, HDR10+, 144Hz রিফ্রেশ রেট, 1300 nits ব্রাইটনেস
রেজোলিউশন 1080 x 2400 পিক্সেল, 20:9 অ্যাসপেক্ট রেশিও, 402ppi
স্ক্রিন প্রটেকশন কর্নিং গরিলা গ্লাস
প্রধান ক্যামেরা ডুয়াল: 50MP (OIS) + 13MP (Ultra-wide)
সেলফি ক্যামেরা 32MP (f/2.4)
ভিডিও রেকর্ডিং ব্যাক: 4K@30fps, 1080p@30/60/120/240fps; ফ্রন্ট: 1080p@30fps
ব্যাটারি 5000mAh, 68W TurboPower চার্জ (৫০% চার্জ মাত্র ১৫ মিনিটে)
চার্জিং পোর্ট USB Type-C 2.0
অডিও স্টেরিও স্পিকার, ডলবি অ্যাটমস সাপোর্ট
সেন্সরসমূহ অন-স্ক্রিন ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ফেস আনলক, অ্যাক্সেলোমিটার, জাইরো, কম্পাস, প্রক্সিমিটি
নেটওয়ার্ক 2G, 3G, 4G, 5G (Dual VoLTE)
Wi-Fi Wi-Fi 6E (2.4GHz / 5GHz / 6GHz)
Bluetooth v5.3
GPS A-GPS, Glonass
NFC রয়েছে
ডাস্ট ও ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স IP68 (১.৫ মিটার পানির নিচে ৩০ মিনিট পর্যন্ত)
বডি ম্যাটেরিয়াল ব্যাক: প্লাস্টিক
ওজন ও আকার ওজন: ১৭০ গ্রাম; পুরুত্ব: ৭.৭ মিমি
রঙের ভ্যারিয়েন্ট Black, Soothing Sea, Caneel Bay, Peach Fuzz

ভালো দিক 

  1. দ্রুত পারফরম্যান্স:
    MediaTek Dimensity 7030 চিপসেট ও ৮ জিবি RAM থাকায় ফোনটি মসৃণ ও দ্রুত কাজ করে।
  2. উচ্চ মানের ডিসপ্লে:
    6.55″ P-OLED ডিসপ্লে, 144Hz রিফ্রেশ রেট, HDR10+ সাপোর্ট — ভিডিও দেখা ও গেমিং খুবই চমৎকার অভিজ্ঞতা দেয়।
  3. চমৎকার ক্যামেরা সেটআপ:
    ৫০MP প্রাইমারি ক্যামেরা (OIS সহ) ও ৩২MP সেলফি ক্যামেরা, যেগুলো দিনে ও রাতে ভালো ছবি তোলে।
  4. ফাস্ট চার্জিং:
    ৬৮ ওয়াট টার্বো চার্জিং – মাত্র ১৫ মিনিটে ৫০% চার্জ!
  5. ওয়াটার ও ডাস্ট রেজিস্ট্যান্ট:
    IP68 রেটিং থাকায় ফোনটি পানি ও ধুলাবালি থেকে সুরক্ষিত।
  6. ডলবি অ্যাটমস স্টেরিও স্পিকার:
    মাল্টিমিডিয়া অভিজ্ঞতা আরও উন্নত করে।
  7. Android 13 এবং Android 14 আপডেট সুবিধা:
    ভবিষ্যতেও সফটওয়্যার আপডেট পাওয়ার নিশ্চয়তা।
  8. হালকা ও পাতলা ডিজাইন:
    মাত্র ১৭০ গ্রাম ওজন ও ৭.৭ মিমি পুরুত্বে খুবই হাতের আরামদায়ক।

দুর্বল দিক 

  1. এক্সপেন্ডেবল স্টোরেজ নেই:
    মাইক্রোএসডি কার্ড ব্যবহার করে স্টোরেজ বাড়ানোর সুযোগ নেই।
  2. প্লাস্টিক ব্যাক:
    ব্যাকপ্যানেলটি প্লাস্টিকের হওয়ায় প্রিমিয়াম অনুভূতি কিছুটা কম হতে পারে।
  3. অফিশিয়ালভাবে বাংলাদেশে পাওয়া যায় না:
    এটি বাংলাদেশে আনঅফিশিয়াল মার্কেটে পাওয়া যায়, তাই ওয়ারেন্টি বা সার্ভিস নিশ্চিত নয়।
  4. LPDDR4X RAM এবং UFS 2.2 স্টোরেজ:
    যদিও যথেষ্ট ভালো, তবে বর্তমানে অনেক ফোনে LPDDR5 RAM ও UFS 3.1 স্টোরেজ ব্যবহৃত হচ্ছে।
  5. টেলিফটো ক্যামেরা নেই:
    জুম ফটোগ্রাফির জন্য আলাদা টেলিফটো লেন্স না থাকায় কিছুটা সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে।

ডিসপ্লে ও মিডিয়া ভিউয়িং এক্সপেরিয়েন্স:

6.55 ইঞ্চির P-OLED ডিসপ্লে, 144Hz রিফ্রেশ রেট ও HDR10+ সাপোর্ট থাকার কারণে ভিডিও দেখা, সোশ্যাল মিডিয়া ব্রাউজিং বা গেম খেলার সময় স্ক্রিনের কালার ও স্মুথনেস খুবই ভালো লাগবে। স্ক্রিন অনেক উজ্জ্বল হওয়ায় বাইরে রোদেও ঠিকঠাক দেখা যায়।

পারফরম্যান্স এক্সপেরিয়েন্স:

Dimensity 7030 চিপসেট ও ৮ জিবি RAM থাকার কারণে ফোনটি দ্রুত কাজ করে। দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য যেমন ফেসবুক, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার চালানো খুবই স্মুথ। গেমিং-এও মোটামুটি ভালো পারফর্ম করে, যদিও খুব হাই-এন্ড গেমে মাঝেমধ্যে সামান্য হিটিং বা ফ্রেম ড্রপ হতে পারে।

ক্যামেরা এক্সপেরিয়েন্স:

৫০ মেগাপিক্সেল মূল ক্যামেরা এবং OIS থাকার কারণে ছবি অনেক শার্প ও ক্লিয়ার আসে, বিশেষ করে দিনের আলোয়। রাতে বা কম আলোতেও ক্যামেরার পারফরম্যান্স ভালো। ৩২MP ফ্রন্ট ক্যামেরা দিয়ে সুন্দর সেলফি তোলা যায়। যারা সোশ্যাল মিডিয়াতে ছবি আপলোড করেন, তাদের জন্য এটি বেশ উপযোগী।

ব্যাটারি ও চার্জিং এক্সপেরিয়েন্স:

৫০০০ mAh ব্যাটারি দিয়ে একদিনের বেশি ব্যাকআপ পাওয়া সম্ভব। হালকা ব্যবহারে এক চার্জে দেড় দিনও চলতে পারে। ৬৮ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং থাকায় মাত্র ১৫-২০ মিনিটেই অনেকটা চার্জ হয়ে যায়, যা খুবই সুবিধাজনক।

নিরাপত্তা ও সেন্সর এক্সপেরিয়েন্স:

অন-স্ক্রিন ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ফেস আনলক দুটোই দ্রুত কাজ করে। এছাড়াও সেন্সরগুলো যথাযথভাবে কাজ করে বলে ব্যবহারকারীরা স্মার্ট ও স্ন্যাপি অভিজ্ঞতা পাবেন।

নিরাপত্তা ও টেকসই অভিজ্ঞতা:

IP68 রেটিং থাকায় ফোনটি পানির ছিটা বা ধুলাবালিতে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কম। হালকা-পাতলা ডিজাইনের হলেও এটি যথেষ্ট শক্তপোক্ত।

অডিও এক্সপেরিয়েন্স:

স্টেরিও স্পিকার ও ডলবি অ্যাটমস সাউন্ড কোয়ালিটির কারণে গান শোনা বা ভিডিও দেখার সময় সাউন্ড ক্লিয়ার ও প্রাণবন্ত মনে হবে।

উপসংহার:

Motorola Edge 40 Neo একটি আধুনিক ও ব্যালেন্সড স্মার্টফোন, যা মিড-রেঞ্জ বাজেটে ব্যবহারকারীদের চাহিদা পূরণে সক্ষম। দুর্দান্ত P-OLED ডিসপ্লে, ৫০ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা, শক্তিশালী ব্যাটারি এবং ৬৮ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং – এসব ফিচার একসাথে এটিকে একটি “ভ্যালু ফর মানি” ফোনে পরিণত করেছে।

ডিজাইন ও ফিচারের দিক থেকে ফোনটি তরুণ প্রজন্মের জন্য আকর্ষণীয় হবে, যারা ফ্যাশন ও পারফরম্যান্স দুটোই চায়। যদিও এক্সপেন্ডেবল স্টোরেজ না থাকা বা প্লাস্টিক ব্যাকের মত কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তবে সামগ্রিকভাবে এটি বেশ ভালো একটি ডিভাইস।

 

Leave a Comment